করোনা আতঙ্কে মোদির নমস্তে ,কলকাতায় রঙ ছেড়ে আবীর

মারণ ভাইরাস আতঙ্কের আঁচ পড়েছে ভারতের হোলি উৎসবেও।রাইসিনা হিলসে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রথাগত হোলি অনুষ্ঠান এ বছর হচ্ছে না।হোলি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরাও।করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বড় জমায়েতে অংশগ্রহণ নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।সেই পরামর্শ মেনেই হোলিতে যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।তিনি লিখেছেন,করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানো প্রতিরোধ করতে বড় জমায়েত নিষেধ করছেন সারা বিশ্বের বিশেষজ্ঞরা।সেই জন্যই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন,এ বছর হোলির মিলন উৎসবে যোগ দেবেন না।

Modi Shah

Indian Prime Minister Narendra Modi (L) and Bharatiya Janata Party (BJP) President, Amit Shah (R) Source: AAP Image/ EPA/RAJAT GUPTA

চিন থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা ভারতীয়দের,দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং থেকে শুরু করে সন্দেহভাজনদের আলাদা করে রাখা,যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও দেশে করোনার প্রভাবমুক্ত করা যাচ্ছে না।অন্যদিকে,দেশীয় রীতিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই এড়ানো যাবে,তাই হাত হাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বা করমর্দন নয়,হাত জোড় করে নমস্তে বা নমস্কার করার অভ্যাস গড়ুন,বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।দেশে মারণ ভাইরাসের আতঙ্ক রুখতে এবার নিজেই আসরে নেমে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।এক অনুষ্ঠানে করোনা ভাইরাসের প্রসঙ্গও তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী।করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত নানা গুজব ছড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া সহ নানা জায়গায়।এই ধরণের গুজবে কান না দেওয়ার জন্যে দেশবাসীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি,পাশাপাশি সচেতনতা ওপরেও জোর দিয়েছেন।কোনও রকম করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত লক্ষণ দেখলে অযথা সময় নষ্ট না করে এ বিষয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসরণ করার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।সংক্রমণ এড়াতে করমর্দনের বদলে নমস্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন মোদী।যে পরামর্শ আগেই ইজ়রায়েলবাসীকে দিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।প্রধানমন্ত্রী মোদী অবশ্য সঙ্গে সরস মন্তব্য করেছেন, নমস্তের অভ্যাস চলে গিয়ে থাকলে এই সুযোগে ঝালিয়ে নিন।

আসলে করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে।এমন অবস্থায় ব্রাসেলস সফর বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বার্ষিক ইন্ডিয়ান-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সামিট-এ যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর।বেলজিয়ামে করোনাভাইরাসে বেশ কিছু মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন।বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানিয়েছেন,দু’দেশের স্বাস্থ্য কর্তারা আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছে,এখনই ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রীর যাওয়াটা ঠিক হবে না। দু'তরফের সুবিধামতো সময়ে পরে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।গতবছর থেকে ভারত-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সম্মেলন নিয়ে তৈরি হয়েছে আগ্রহ।বিশেষ করে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ অবলোপ ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রেক্ষাপটে সম্মেলনে কী আলোচনা হবে,তার দিকে নজর ছিল কূটনৈতিক মহলের।গত মাসে জম্মু-কাশ্মীরে পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দিয়েছিলেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা।তার আগে ফেব্রুয়ারিতে ব্রাসেলসে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

এই অবস্থায়,দেশীয় রীতিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই এড়ানো যাবে,তাই হাত হাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বা করমর্দন নয়,হাত জোড় করে নমস্তে বা নমস্কার করার অভ্যাস গড়ুন, বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশে এই মারণ ভাইরাসের আতঙ্ক রুখতে এক ভিডিও বার্তাতে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন,আমি আমার সমস্ত দেশবাসীকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত গুজব থেকে দূরে থাকার জন্যে অনুরোধ করছি।তেমন হলে প্রয়োজনে এ বিষয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত।করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যে গোটা বিশ্ব এখন ভারতীয় নমস্তে বা নমস্কার পদ্ধতি গ্রহণ করছে,সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন,যদি কোনও কারণে আমরা এই অভ্যাসটি ছেড়ে দিয়ে থাকি তবে আবার তা গ্রহণের সময় এসেছে।হাত ধরে শুভেচ্ছাবার্তা বিনিময়ের পরিবর্তে আবার নমস্কার করার অভ্যাসটি শুরু করুন, এটাই এখন উপযুক্ত সময়।

এদিকে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছাপ ফেলেছে কলকাতার দোলের বাজারে।রং,পিচকিরি,আবীর থেকে কলকাতার বড়বাজারের অনেক দোকানে কিনতে গিয়ে চোখে পড়ছে,অধিকাংশের গায়েই লেখা,মেড ইন চায়না।চিনে তৈরি সামগ্রী মানেই যে অনেকের মধ্যে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক কাজ করছে,গত ক দিনে তা জেনে গিয়েছেন দোকানের বিক্রেতারাও।তবে তা বিক্রিও করছেন,আর বলছেন ওই সব সামগ্রী গত বছরের এপ্রিল-মে মাসে কলকাতায় এসেছে।তখন করোনাভাইরাসের অস্তিত্বই ছিল না।বিক্রেতার কথায় আশ্বস্ত হয়ে অনেকে কিনলেও তাঁরা স্বীকার করছেন,এ বার দোল এবং হোলিতে অনেকেই মুখোশ বা পিচকিরি কিনতে গিয়ে সংশয়ে পড়ছেন।করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর পর থেকে চিন থেকে পিচকিরি বা মুখোশ আসা কার্যত বন্ধ।নতুন তো কিছু আসছেই না।যা বিক্রি হচ্ছে, সবই অনেক আগে থেকে মজুত করা।চিনে তৈরি হওয়া পিচকিরির বিক্রি কমে গিয়েছে।

নতুন করোনা ভাইরাসের উপদ্রবে পিচকিরির বিক্রি কমে যাওয়ায় আবিরে বৈচিত্র এনেছেন বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা।এ বার তাঁরা আবিরের রং নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।বলছেন, চিরকালীন লাল, সবুজ বা গোলাপির বাইরে অন্য রঙের আবির চাইছেন নতুন প্রজন্ম।সেই মতো তাঁরা এ বার চকলেট, চন্দন ও সাদা রঙের আবির তৈরি করেছেন।চকলেট রঙের আবিরে চকলেটের গন্ধ পাওয়া যাবে।সাদা আবিরে থাকছে ভ্যানিলার গন্ধ।এ বার করোনা-আতঙ্কে এমনিতেই পিচকিরির চাহিদা কম।তাই এই নতুন আবির প্রচুর বিক্রি হচ্ছে।


Share

Published

By Partha Mukhapadhdhaya
Presented by Abu Arefin

Share this with family and friends


Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand