মোদী পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গুজরাতে সুরাত জেলা আদালত এর আগে রাহুলকে দুই বছর জেলের সাজা দিয়েছিল। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে।
READ MORE

নতুন এসবিএস রেডিও অ্যাপ ডাউনলোড করুন
এক দিন আগে সুরাত জেলা আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা রাহুলকে ১০ হাজার টাকার জামিনে মুক্তি দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চতর আদালতে আপিল করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দোষী সাব্যস্ত করার উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেন নি তিনি। আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এ ক্ষেত্রে ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদের পদ রক্ষার পথে অন্তরায় হয়েছে, ২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়। ঘটনাচক্রে, এক দশক আগে ওই রায় কার্যকর করার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধীই। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের হাত থেকে এই সংক্রান্ত কাগজ নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারে বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে অন্য বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে আন্দোলনের পথে নেমেছে কংগ্রেস। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ১২টি বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বাম, জেডি (ইউ), ডিএমকের পাশাপাশি বৈঠকে ছিল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)-ও। এর পরে সংসদ ভবন থেকে মিছিল করে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান তাঁরা।
READ MORE

ভারতে সাংবাদিকতায় নারীরা এগিয়ে রয়েছে
ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১) ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-এর ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হবে, কি না বিতর্কের জবাবে শাসক দল বিজেপির দাবি, নিম্ন আদালত যেহেতু রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করেছে, কাজেই তাঁর লোকসভার সাংসদ পদ খারিজ হওয়াই উচিত ছিল।
অন্য দিকে, রাহুলের আইনজীবীরা বলছেন, আদালত সাজা ঘোষণার পাশাপাশি জামিনের আবেদনও মঞ্জুর করেছে। অর্থাৎ, সাজা কার্যকর হচ্ছে না। ফলে উচ্চতর আদালতে জামিনের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। রাহুলের আইনজীবী বাবু মঙ্গুকিয়া বলেছেন, নিম্ন আদালত সাজা কার্যকর মুলতুবি রেখে জামিন মঞ্জুরের পরেও জনপ্রতিনিধির পদ খারিজ করা হয়েছে, এমন কোনও নজির নেই।
এখন ঘটনা হলো, এই পরস্পরবিরোধী দাবির নেপথ্যে রয়েছে ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের দু’টি ধারা। ওই আইনের ৮(৩) ধারায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি অপরাধে দু’বছরের বেশি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কোনও ব্যক্তি সাজা ঘোষণার দিন থেকেই জনপ্রতিনিধি হওয়ার অধিকার হারাবেন। এবং মুক্তির পর ছ’বছর পর্যন্ত ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। কিন্তু ওই আইনেরই ৮(৪) ধারায় বলা হয়, সাজা ঘোষণার সময় যদি কেউ জনপ্রতিনিধি থাকেন, তা হলে পরবর্তী তিন মাস বা উচ্চতর আদালতে সাজা পুনর্বিবেচনার আবেদনের নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত তাঁর সদস্যপদ খারিজ হবে না।
এর মধ্যে রাহুল গান্ধীর সাজা ঘোষণার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক মানহানির মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তেলঙ্গানার কংগ্রেস সাংসদ রেণুকা চৌধুরি। টুইটারে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রেণুকা চৌধুরি লিখেছেন, এবার দেখবেন আদালত দ্রুত কী ব্যবস্থা নেয়। সেই সঙ্গে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সেই বিতর্কিত মন্তব্যের ভিডিও ক্লিপিংসও পোস্ট করেছেন তিনি।
২০১৮ সালে হাসতে হাসতেই রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন রামায়ণ সিরিয়ালের পরে এমন শূর্পনখার মতো হাসি তার সৌজন্যেই শুনতে পেয়েছেন তিনি। নিশানায় ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করে হেসে ওঠা তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সাংসদ রেণুকা চৌধুরি। তার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের পরে সরব হয়েছিলেন বিরোধী সাংসদেরা। তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধীকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনলেও রাজ্যসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু তা খারিজ করে দেন।
এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: এসবিএস বাংলা।