ওয়েস্টার্ন সিডনি গত মঙ্গলবার ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে, যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে উষ্ণতম দিন ছিল।
"এটি মেনে নেয়া যায় না," পেনরিথের একজন বাসিন্দা বলেন।
"এখানে প্রতি বছরই আগের বছরের চেয়ে গরম বাড়ছে, আমার মনে হয় আমি সূর্যের মুখে আছি।"
তাপ শহরের জলবায়ু বৈষম্য নিয়ে আলোচনাকে নতুন করে তুলে এনেছে।
"সাগর এবং জলাশয়ের সান্নিধ্যের কারণে, সিডনি শহরের পূর্ব দিকে বাসিন্দারা সমুদ্রের বাতাস থেকে উপকৃত হচ্ছে," শহুরে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ডঃ নেগিন নাজারিয়ান এসবিএস এক্সামিনসকে বলেন৷
"এই এলাকায় তাপমাত্রা পশ্চিম সিডনির থেকে ধারাবাহিকভাবে কম।"
তিনি বিশ্বাস করেন যে উল্লেখযোগ্য নগর উন্নয়ন এবং জনসংখ্যার স্পষ্ট বৃদ্ধি গরম বাড়তে অবদান রাখছে। যেহেতু জীবনযাত্রার ব্যয় কম, তাই লোকেরা পশ্চিম এলাকাগুলোতে চলে গেছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানী এবং জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক নাইজেল ট্যাপার এসবিএস এক্সামিনসকে বলেন যে শহরের সবচেয়ে উষ্ণ এলাকাগুলিতে সাধারণত "সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ" জনগণের বাস।
তিনি বলেন যে এই অঞ্চলগুলিতে গাছপালা এবং সবুজ স্থানের "অভাব" রয়েছে যার অর্থ স্থল এলাকায় দিনরাত তাপ আটকে থাকে।
সিডনির উপকূলীয় শহরতলির বাসিন্দারা যেমন সমুদ্রের বাতাস উপভোগ করে, তেমন সুবিধার অনুপস্থিতি এই সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে তোলে, এই অঞ্চলটিকে শীতল হতে বাধা দেয়।
ব্যাঙ্কসটাউন হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ জরুরী চিকিত্সক ডাঃ লাই হেং ফং বিশ্বাস করেন যে ওয়েস্টার্ন সিডনির শহুরে নকশা এত গরম একটি অঞ্চলের জন্য অনুপযুক্ত।
"অন্যান্য উপকূলীয় শহরতলির তুলনায় দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনি খুব বেশি মাত্রায় তাপ দ্বারা প্রভাবিত," তিনি বলেন।
"বাড়িগুলিতে তেমন কোন সবুজের দেখা নেই, এবং খুব কাছাকাছি। কালো ছাদ থাকায় এই বাড়িগুলি তৈরি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই কোনও ধরণের তাপ প্রশমনের ব্যবস্থা করা হয় নি।"
'হিট আইল্যান্ড' বা 'তাপ দ্বীপ' কি?
এই শহুরে নকশাটি করা হয়েছে এমনভাবে যেটির প্রবর্তনকে 'তাপ দ্বীপ' প্রভাব বলা হয়।
ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের পিটার ক্র্যাঙ্কের মতে, প্রাকৃতিক পৃষ্ঠের অভাবের কারণে একটি তাপ দ্বীপ সৃষ্টি হয়।
"মূলত এটির কারণ হল যে আমরা প্রাকৃতিক পৃষ্ঠতলগুলিকে অ্যাসফল্ট এবং কংক্রিট, কাচ এবং ধাতুর মতো জিনিস দিয়ে প্রতিস্থাপন করছি, যা তাপকে আটকে রাখে এবং প্রাকৃতিক পৃষ্ঠের তুলনায় বিভিন্ন মাত্রায় তাপ ছড়িয়ে যায়," তিনি বলেন।
ফলস্বরূপ, ওয়েস্টার্ন সিডনির বাসিন্দারা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ক্রমাগত বেড়ে যাওয়া উত্তপ্ত তাপমাত্রা সহ্য করছে।
তাপমাত্রা বাড়তে থাকায়, ডাঃ ফুং পশ্চিম সিডনির উত্তাপকে কীভাবে মোকাবেলা করবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
আমরা যথারীতি কাজ চালিয়ে যেতে পারছি না। এটা পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।ব্যাঙ্কসটাউন হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ জরুরী চিকিত্সক ডাঃ লাই হেং ফং
আমরা যথারীতি কাজ চালিয়ে যেতে পারছি না। এটা পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
"সবচেয়ে বড় যে জিনিসটি পরিবর্তন করতে হবে তা হল কমিউনিটির উপর ফোকাস করা, কারণ তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে," তিনি বলেন।
"কমিউনিটিকে এ বিষয়ে আরও সচেতন করতে হবে, যাতে তারা বুঝতে পারে যে এটি আসলে এমন একটি সমস্যা যা আপনাকে নিশ্চিহ্ন করতে এবং ভীষণ অসুস্থ করার ক্ষমতা রাখে।"
এসবিএস বাংলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় সকল জনগোষ্ঠীর জন্য এসবিএস সাউথ এশিয়ান চ্যানেলের অংশ।
এসবিএস বাংলা লাইভ শুনুন প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ, ডিজিটাল রেডিওতে, কিংবা, আপনার টেলিভিশনের ৩০৫ নম্বর চ্যানেলে। এছাড়া, এসবিএস অডিও অ্যাপ-এ কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটে। ভিজিট করুন www.sbs.com.au/bangla