অস্ট্রেলিয়া জাতিসংঘে সফল ফিলিস্তিনি পূর্ণ সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে

United Nations General Assembly meeting on Membership of Palestine in Manhattan - 10 May 2024

The United Nations General Assembly determines in a vote, 143 For and 9 Against, that the State of Palestine is qualified and should be admitted as a member to the United Nations at the UN Headquarters. The United Nations General Assembly votes to determine if the State of Palestine is qualified and should be admitted as a member of the United Nations. Source: SIPA USA / Derek French / SOPA Images/Derek French / SOPA Images/Sipa USA

জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ পেতে ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই ভোট দেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া ছিল ১৪৩টি দেশের মধ্যে একটি। কিন্তু ফেডারেল বিরোধী দল বলছে সরকারের এই সিদ্ধান্ত আগেভাগেই নেয়া হলো।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো
  • "এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনকে সাধারণ পরিষদের মধ্যে একটি আসন পেতে সাহায্য করবে।"
  • প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্ব থাকা জরুরি।
  • রাফাহ আক্রমণের বিরুদ্ধে সতর্কতা উপেক্ষা করার প্রেক্ষিতে শনিবারের ভোটের ফলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে।
১৪৩টি দেশ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করেছে যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়াও আছে।

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থোনি আলবানিজি বলেছেন যে এই ভোট দীর্ঘকাল ধরে থাকা অস্ট্রেলিয়ার দ্বিদলীয় অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তিনি বলছেন, "দুই রাষ্ট্রের সমাধান হিসেবে ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের শান্তি ও নিরাপত্তায় বসবাসের অধিকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এই প্রস্তাব, যেখানে জাতিসংঘের ১৯৬৭ সালে প্রস্তাবিত সীমান্তের বিষয়টি নির্দেশ করে।"

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার ভোট এই অঞ্চলে শান্তি রক্ষায় গতি আনবে।

তবে, তিনি বলেছেন যে রেজোলিউশনের পক্ষে ভোট দেওয়া ইঙ্গিত দেয় না যে অস্ট্রেলিয়া এখনও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

পূর্ণ সদস্যপদ প্রদানে ব্যর্থ হলেও, রেজোলিউশনটি জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি পর্যবেক্ষক অধিকারের একটি সীমিত সম্প্রসারণ।

অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের ড. ব্রাইস ওয়েকফিল্ড চ্যানেল নাইনকে বলেছেন যে এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনকে সাধারণ পরিষদের মধ্যে একটি আসন পেতে সাহায্য করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্ব থাকা জরুরি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল এবং অন্য সাতটি দেশ খসড়া প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে।

তবে কানাডা এবং যুক্তরাজ্য সহ আরও ২৫টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল।

এদিকে বিরোধীদল এই ভোটকে সমর্থন করার জন্য সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে এবং যুক্তি দিচ্ছে যে গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের সাথে লাইনের বাইরে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া একটি লজ্জাজনক বার্তা পাঠাচ্ছে।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন যে এই ভোট ইসরায়েলের প্রতি অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সবচেয়ে বৈরী নীতিমূলক কাজ।

বিরোধী পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র সাইমন বার্মিংহাম বলেছেন যে সরকার চাপের মুখে পড়েছে এবং এটা করে (ইসরায়েলের বিরুদ্ধে) সহিংসতাকে পুরুস্কৃত করছে।

তিনি বলছেন, "সরকার যে দীর্ঘস্থায়ী দ্বিদলীয় অবস্থানের কথা বলছে তা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া সমঝোতাপূর্ণ দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান অনুসরণ করে একটি ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে যেখানে ভবিষ্যতের সীমানা, প্রত্যাবর্তনের অধিকার এবং নিরাপত্তার গ্যারান্টি থাকবে।"

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করা মানে এই নয় যে ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে যাওয়া।

তিনি বলছেন, "ইসরায়েলের নাগরিকদের মানবাধিকারের অবমাননা না করেই আপনি ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকারকে সমর্থন করতে পারেন৷"

পেনি ওং বলেছেন যে প্রথম খসড়া থেকে ভোটের সময় রেজোলিউশনটিতে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে এবং জোর দিয়ে বলেন যে অস্ট্রেলিয়ার সমর্থন হচ্ছে হামাসের ইচ্ছাকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করা।

তিনি বলছেন, "আমি স্পষ্ট করে দিয়েছি যে ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রে হামাসের কোনো ভূমিকা নেই। ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকির মুখে পড়তে পারে না। এবং আমি এটা বলব, এখানে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ভূমিকা রয়েছে। আমরা এমন একটি ফিলিস্তিনি শাসক কর্তৃপক্ষ দেখতে চাই যারা শান্তির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে।"
রাফাহ আক্রমণের বিরুদ্ধে সতর্কতা উপেক্ষা করার প্রেক্ষিতে শনিবারের ভোটের ফলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে।

প্রায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ, যার মধ্যে ৬ লক্ষ শিশু রয়েছে, তারা বর্তমানে রাফাহতে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে ইসরায়েল তার আক্রমণাত্মক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

গ্রিনস সিনেটর ম্যাক্স চ্যান্ডলার-ম্যাথার বলেছেন এই ভোট সঠিক পথের দিকে যাওয়ার একটি ছোট পদক্ষেপ।

তিনি বলছেন, "গাজা এবং রাফাহতে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য এটি যথেষ্ট নয় এবং সত্যি বলতে, লেবার পার্টি যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর বিষয়ে সিরিয়াস থাকে তবে তারা এলবিট সিস্টেম বাতিল সহ ইসরায়েলের সাথে তাদের দ্বিমুখী অস্ত্র ব্যবসা নিষিদ্ধ করবে এবং ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করবে।"

তিনি বলেন যে ইসরায়েল ৩৫,০০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে যা অনেক অস্ট্রেলিয়ানকে ভীষণ বিক্ষুব্ধ করছে।

সিনেটর ম্যাথার আরো বলেন, "নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তারা রাফাহতে গণহত্যামূলক আক্রমণ শুরু করছে, তাদের মধ্যে ৬ লক্ষ শিশু সংক্রামক রোগে ভুগছে, তারা প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকিতে। এই মুহূর্তে অনেক অস্ট্রেলিয়ান এটা জেনে আতঙ্কিত যে অস্ট্রেলিয়ান সরকার এখনও ইসরায়েলকে আর্ম স্প্রে সরবরাহ নিষিদ্ধ করতে এবং ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করতে অস্বীকার করেছে, যদিও তারা আমাদের চোখের সামনে সক্রিয়ভাবে গাজা এবং রাফাহতে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে।"

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস সাউথ এশিয়ান-এ আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।

কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ এ।

রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: এসবিএস বাংলা।


Share
Follow SBS Bangla

Download our apps
SBS Audio
SBS On Demand

Listen to our podcasts
Independent news and stories connecting you to life in Australia and Bangla-speaking Australians.
Ease into the English language and Australian culture. We make learning English convenient, fun and practical.
Get the latest with our exclusive in-language podcasts on your favourite podcast apps.

Watch on SBS
SBS Bangla News

SBS Bangla News

Watch it onDemand